শরীয়তপুর জেলায় প্রতি বছরই ব্যাপক পরিমানে উৎপাদিত হয় ধান, পাট, গম, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, ধনিয়া, মুসুরী, টমেটো, লাউ, কাঁচা, মরিচ, বেগুন, পেঁপে, লাল শাক, জালি কুমড়াসহ নানান ধরনের ফসল, ফলমূল ও শাক-সবজি। সমগ্র জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য পাঠানো হতো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
তবে এখন শরীয়তপুর জেলার কৃষিপণ্য শুধু বাংলাদেশের বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে না। শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন কৃষিপণ্য সুনামের সঙ্গে ব্যাপক চাহিদায় বিক্রি হচ্ছে সূদুর সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
চলতি বছরের প্রথমে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার কৃষিপণ্যর প্রথম চালান ইউরোপের সুইজারল্যান্ডে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সুইজারল্যান্ডে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সেসব কৃষিপণ্য। সেই সময় সুইজারল্যান্ডের গুটি কয়েক বাঙালি ব্যবসায়ীর দোকানে শোভা পেত বিক্রির জন্য রপ্তানি হওয়া সবজি। রপ্তানি হওয়া সবজির পরিমাণও ছিল কম। তবে এখন জাজিরা উপজেলার কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে সমগ্র সুইজারল্যান্ড জুড়ে সবচেয়ে খ্যাতনামা চেইন শপগুলোতে এবং রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
জেলা প্রশাসক শরীয়তপুর মো. পারভেজ হাসান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা যাবে না’ এই অনুশাসনের গুরুত্ব অনুধাবন করে শরিয়তপুর জেলা প্রশাসন জেলার সর্বত্র কৃষি বিপ্লব ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও সরবরাহের প্রতিটি পর্যায় উন্নয়নে নিবিড়ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। সকল অংশিজনদের আন্তরিকতায় সেসব উদ্যোগ দ্রুত সাফল্যের মুখও দেখতে শুরু করে অচিরেই। তারই পরিক্রমায় জাজিরার সবজি গত বছরই ইউরোপে রপ্তানি শুরু করেছে।
এদিকে দেশের বাজারে সবজির দাম বেশি হলেও কৃষক লাভ পান খুব কম, বেশিরভাগ লাভ করেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। অন্যদিকে এইবারে জাজিরার সবজি রপ্তানিকারকেরা যে পণ্যগুলো নিচ্ছেন বা নেবেন, তা শুধু বেশি পরিমাণেই নেবেন না, বরং স্থানীয় বাজারের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি দামও কৃষককে দেয়া হবে। এতে কৃষক সরাসরি অনেক বেশি লাভবান হবেন, কৃষিকাজে উৎসাহও পাবেন।
ইউরোপে যেসব সবজির চাহিদা আছে, জাজিরায় তা উৎপাদন হয়। এটি খেয়াল করেই জেলা প্রশাসন এই উদ্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় আনে। জাজিরার লাউ, জালি কুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল, পটোল, মিষ্টিকুমড়া, কচু, কাঁচা মরিচ, শিম, পেঁপে, লতি, ঢ্যাঁড়স, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের শাক নেয়ার আগ্রহ দেখিয়ে চাহিদাপত্র দিয়েছে রপ্তানিকারকরা। তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনসহ সবজি উৎপাদন ও সরবরাহের প্রতিটি পদক্ষেপে আন্তরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
টিএইচ